9
বারোজন সাহাবিরে তবলিগো পাঠাইলা
বাদে ইছায় হউ বারোজন সাহাবিরে এখানো দলা করলা, তারারে হকল জাতর জিন-ভুত ছাড়ানি, বেমারিরে ভালা করার ইজাজত আর খেমতা দিলা। বাদে তাইন আল্লার বাদশাইর তবলিগ আর বেমারিন্তরে শিফা করাত এরারে পাঠাইলা। তাইন কইলা, “তুমরা পথর লাগি লাঠি, গাইট-বুছকি, খানি-খুরাকি, টেকা-পয়সা, বা দুইটা কোর্তাও লগে নিও না। কুনু গাউত গেলে তুমরা যে বাড়িত হামাইবায়, অউ বাড়িতউ রইও, আর অন থাকি হিরবার বিদায় অইও। মানষে যুদি তুমরারে জাগা না দেইন, তে হন থাকি বারইবার আগে তুমরার পাওর ধুইল ফুছিয়া ফালাইও, অউ ধুইলেউ তারার বিপক্ষে সাক্ষি দিবো।” সাহাবি অকল রওয়ানা অইয়া গাউয়ে গাউয়ে গিয়া, আল্লার খুশ-খবরি তবলিগ আর বেমারিন্তরে শিফা করাত লাগলা।
রাজা হেরোদে ইছার অউ কাম-কাজর খবর হুনিয়া খুব ঘাবড়ি গেলা। কুনু কুনু মানষে তানরে কইলা, এহিয়া নবী হিরবার জিন্দা অইয়া উঠি গেছইন। আর কুনু কুনু জনে কইলা, ইলিয়াছ নবীয়ে দরশন দিছইন। হিরবার কেউ কেউ কইলো, পুরানা জমানার কুনু নবী জিন্দা অইয়া আইছইন। তেউ হেরোদে কইলা, “আমি নিজেউ তো এহিয়ার মাথা কাটাইছি, তে অউ যেতা হুনরাম, এইন আসলে কে?” এরদায় হেরোদে ইছারে দেখার খিয়াল অইলো।
পাচ আজার মানষর গাইবি খানি
10 ইছায় যে বারোজন সাহাবিরে তবলিগো পাঠাইছলা, তারা ফিরিয়া আইলা। আইয়া তানরে জানাইলা, তবলিগি সফরো কিতা কিতা করছইন, অউ তাইন এরারে লইয়া খুব নিরিবিলি হালতে বায়ত-ছয়দা নামর এক গাউত গেলা। 11 অইলে মানষে ই খবর হুনিয়া দলে দলে ইছার খরে অইয়া রওয়ানা দিলাইলা। তাইন এরারে খুশি মনে কবুল করলা। তারার গেছে আল্লার বাদশাইর বয়ানি তবলিগ করলা, আর যেতা বেমারির বেমার শিফা অওয়া জরুর আছিল, তাইন এরারে শিফা করলা।
12 হাইঞ্জা বালা হউ বারো জন সাহাবি আইয়া ইছারে কইলা, “হুজুর, আমরা যে জাগাত আছি, ইখান খুব নিরিবিলি জাগা। তে অতা মানষরে বিদায় দিলাউক্কা, তারা কান্দা-কাছার গাউত গিয়া রাইতকুর থাকা-খাওয়ার বেবস্তা করউক।” 13 ইছায় জুয়াপ দিলা, “তুমরা তারারে খানা খাওয়াও।” তারা কইলা, “আমরার গেছে তো খালি পাচখান রুটি, দুইটা বিরান মাছ আছে, আর কুন্তা নাই। তে আমরা বাজারো গিয়া এরার লাগি খানা লইয়া আনতাম নি?” 14 ইছায় কইলা, “এরারে পইঞ্চাশ-জন, পইঞ্চাশ-জন করি বওয়াই দেও।” ইনো খালি বেটা মানুষউ আছলা পাচ আজারর লাখান। 15 তেউ সাহাবি অকলে তারারে বওয়াইলা। 16 ইছায় অউ পাচোখান রুটি আর দুইও মাছ লইয়া আছমানর বায় চাইয়া আল্লার শুকরিয়া আদায় করলা। বাদে রুটি আর মাছ টুকরা টুকরা করি ভাংগিয়া, সাহাবি অকলর আতো দিয়া কইলা বাটিয়া দিলাইতা। 17 অউ খানায় হকল মানষে পেট ভরিয়া খাইলা। খাইয়া হারলে যেতা গুড়া-গাড়া রইছিল অতা দলা করলে বারো টুকরি ভরিগেল।
হজরত ইছার মউতর আগাম খবর
18 একদিন ইছা এক নিরাই জাগাত দোয়া করাত বইরা, খালি সাহাবি অকল তান লগে আছলা। তাইন এরারে জিকাইলা, “কওছাইন, মানষে কিতা মনো করইন, আমি কে?” 19 তারা জুয়াপ দিলা, “কুনু কুনু মানষে কইন, আপনে এহিয়া নবী। কুনু জনে কইন ইলিয়াছ নবী, আর কেউ কেউ কয় বউত আগর জমানার কুনু নবী হিরবার জিন্দা অইয়া উঠিছইন।” 20 ইছায় এরারে জিকাইলা, “অইলে তুমরা কিতা মনো করো, আমি কে?” সাহাবি পিতরে কইলা, “আপনেউ আল্লার ওয়াদা করা হউ আল-মসী।” 21 ইছায় তারারে কইলা, “খবরদার! ইতা আর কেউররে হুনাইও না।”
22 বাদে তাইন কইলা, “আমি বিন-আদমে বউত কষ্ট সইয্য করা লাগবো। সমাজর মুরব্বি অকলে, বড় ইমাম, আর মৌলানা অকলে আমারে এলা করবা। আমারে কাতল করা অইবো, অইলে মউতর তিন দিনর দিন আমার হিরবার জিন্দা অইয়া উঠা জরুর।”
23 তাইন এরা হকলরে কইলা, “আমার তরিকায় কেউ জিন্দেগি কাটাইতে চাইলে, হে তার নিজর খুশিয়ে চলা বাদ দেউক। তার আপন দুখ-কষ্টর সলিব পরতেক দিন বইয়া লইয়া আমার খরে খরে আউক। 24 যে মানষে নিজর জান বাচাইতো চায়, হে তার হাছারর জিন্দেগি খুয়াইবো। অইলে যে জনে আমার লাগি নিজর জান কুরবানি দেয়, হে হাছারর জিন্দেগি পাইবো। 25 কুনু মানুষ যুদি আস্তা দুনিয়ার মালিক বনিয়াও তার হাছারর জিন্দেগি মানি আখের খুয়াইলায়, তে তার কুনু ফায়দা অইলো নি? 26 হুনউক্কা, কেউ যুদি আমার লাগি বা আমার তালিমর লাগিয়া মুখ লুকায়, তে আমি বিন-আদম যেবলা আমার নিজর, আর পবিত্র ফিরিস্তা অকলর, আর গাইবি বাফর শান-তজল্লিয়ে দুনিয়াত হিরবার আইমু, অউ সময় আমিও এরারে দেখলে মুখ লুকাইমু। 27 আমি তুমরারে হাছা কথা কইরাম, অউ মজলিছো অউলা কয়জন মানুষ আজির আছইন, আল্লার বাদশাই না দেখিয়া এরার মউত অইতো নায়।”
হজরত ইছার নুরানি ছুরত
28 অউ তালিমর একদ হাপ্তা বাদে, ইছা দোয়া করার লাগি তান সাহাবি পিতর, হান্নান, আর ইয়াকুবরে লইয়া এক টিল্লার উপরে উঠলা। 29 তাইন দোয়া কররা, অমন সময় আখতাউ তান মুখর রংগ বদলিগেল, তান ফিন্নর কাপড়-চুপড় ধলা চকচকা অইগেল। 30 অউ সময় দেখা গেল, দুইজন মানষে আইয়া তান লগে বাতচিত কররা, এরার একজন অইলা মুছা নবী, দুছরা জন ইলিয়াছ নবী। 31 তারা আল্লাই জালাল আর শানে দেখা দিলা। জেরুজালেম সফরর কালো ইছা যেন আল্লার মর্জি মাফিক মউতর মুখামুখি অইরা, অউ বেয়াপারেউ তারা বাতচিত করলা।
32 সাহাবি পিতর আর তান লগর অকল বেমালুম ঘুমো আছলা। আখতাউ ঘুম ভাংগি যাওয়ায় তারা ইছার জালাল-শান দেখলা, আর তান কান্দাত উবা অউ দুইও জনরেও দেখলা। 33 হউ দুইওজন যেবলা ইছার গেছ থাকি রওয়ানা দিলাইরা, অউ সময় পিতরে কইলা, “হুজুর, আমরাও তো অনো আছি, খুব ভালা অইছে, তে এককাম করিলাই, আমরা অনো তিনখান ডেরা-ঘর বানাইলাই, এখান আপনার, এখান ইলিয়াছ নবী, আর এখান মুছা নবীর লাগি।” পিতরে যেন কিতা কইরা, ইতা তাইন নিজেউ বুজলা না।
34 পিতরে অতা মাতিরা, অউ সময় আখতাউ মেঘর কালনি আইয়া তারারে গুরিলিলো। তারা কালনির আওড়ে হামানির বাদে সাহাবি অকল ডরাইগেলা। 35 আর কালনির ভিতর থাকি অউ আওয়াজ আইলো, “এইনউ আমার খাছ মায়ার জন, তুমরা এন কথা মানো।”
36 ই আওয়াজর বাদেউ দেখা গেল, ইছা হনো একলা উবাই রইছইন। সাহাবি অকল নিরাই অইগেলা, তারা যেতা দেখছিলা অউ সময় ইতা আর কেউররে হুনাইলা না।
জিনর আছর আলা পুয়া
37 বাদর দিন ইছা আর সাহাবি অকল পাড়র টিল্লা থাকি লামিয়া আইলে, বউত মানুষ তান লগে দেখা করাত আইয়া ভিড় বান্দিল্লা। 38 অউ ভিড়র মাজর একজনে চিল্লাইয়া কইলো, “হুজুর, আমার পুয়াগুর বায় খিয়াল করউক্কা, অগু আমার একমাত্র আওলাদ। 39 তারে একটা জিনে ধরে, ইগিয়ে তারে ছাড়তো চায় না, হে আখতাউ চিক দিয়া উঠে আর মাটিত পড়িয়া ছাটিয়ায়। তার মুখেদি ফেনা বারয়, হেশে তারে আছাড়িয়া আধ-মরা করি ফালাই থইয়া যায়। 40 আমি আপনার সাহাবি অকলর গেছে মিনত-কাজ্জি করছলাম অগুতারে খেদাইবার লাগি, অইলে তারা পারছইন না।”
41 ইছায় কইলা, “ও বেইমান আর নাফরমানর জাত, আমি আর কতদিন তুমরার লগে রইমু, তুমরার ছাতানি সইয্য করমু? দেখিছাইন, তুমার পুয়ারে অনো আনো।” 42 বেটায় পুয়ারে লইয়া আগুয়ার, অউ সময় জিন্নাতে তারে মাটিত ফালাইয়া জাতিয়া ধরলো, হে হুতিয়া ছাটিয়ানি লাগাইলো। তেউ ইছায় জিন্নাতরে ধামকি দিলা, তাইন অউ পুয়ারে ভালা করিয়া তার বাফর আতো সমজাই দিলা। 43 আল্লার কুদরতি লিলা-খেলা দেখিয়া হকল মানুষ তাইজ্জুব অইগেলা।
দুছরা বার তান মউতর আগাম খবর
ইছার কেরামতি কাম-কাজ দেখিয়া হক্কলে তাইজ্জুব বনিয়া চিন্তা কররা, অউ সময় তাইন সাহাবি অকলরে কইলা, 44 “আমার কথা খানাইন তুমরা মন দিয়া হুনো, আমি বিন-আদমরে তো মানষর আতো ধরাই দেওয়া অইবো।” 45 সাহাবি অকলে ই মাতর কুনু মানি বুজলা না। আল্লায় তারার গেছে ইখান গাইব রাখলা, যাতে তারা না বুজইন। আর অউ বেয়াপারে ইছারেও কুন্তা জিকাইতে তারার সাওস অইলো না।
বড় কে?
46 সাহাবি অকলর মাজে কে হকল থাকি বড়, অতা লইয়া তারা তর্কা-তর্কি কররা, 47 এরমাজে ইছায় তারার দিলর ভাব বুজিলিলা। তাইন এক নাবালিক হুরুতারে কান্দাত আনিয়া কইলা, 48 “যে জনে আমার লাগি অউ হুরুতার লাখান কুনু ছাবালরে কবুল করে, হে আমারেউ কবুল করে। আর আমারে যে কবুল করে, হে খালি আমারে নায়, আমারে যেইন বেজিছইন তানরেও কবুল করলো। তুমরার মাজে যে জন হকল থাকি হুরু, হে-উ হকল থাকি বড়।”
49 বাদে সাহাবি হান্নানে কইলা, “হুজুর, আমরা দেখলাম আপনার নাম লইয়া একজনে ভুত ছাড়ার। দেখিয়া আমরা তারে মানা করছি, হে তো আমরার তরিকার নায়।” 50 ইছায় তানরে কইলা, “আর মানা করিও না, যে তুমরার বিপক্ষে নায়, হে তো পক্ষেউ আছে।”
জেরুজালেম যাওয়ার পথে হজরত ইছা (৯:৫১-১৯:২৭)
হজরত ইছা জেরুজালেমর বায় রওয়ানা
51 ইছায় বেহেস্তো তশরিফ নিবার দিন ঘনাইয়া আইলো, অউ তাইন জেরুজালেমো যাইতা করি নিয়ত করলা। 52 তান আগে অইয়া খবরিয়া অকল পাঠাইলা। তারা আগে গিয়া হকলতা জুইত-জাইত করার খিয়ালে শমরিয়া জাতির এক গাউত গিয়া হামাইলা। 53 অইলে হি গাউর মানষে যেবলা হুনলা, ইছা জেরুজালেম যাইতা, হুনিয়া তারা তানরে আশ্রয় দিলো না। 54 এরদায় তান সাহাবি ইয়াকুব আর হান্নানে কইলা, “হুজুর, ইলিয়াছ নবীর লাখান আমরাও অখন আরজ করতাম নি, আছমানি আগুইন লামিয়া অতারে বিনাশ করিলাউক?” 55 ইছায় তারার বায় ফিরিয়া ধামকি দিয়া কইলা, “তুমরা জানো না নি তুমরা কুন লাখান রুহর গড়া? আমারে কুনু বেজা অইছে নি মানষর বিনাশ করতাম? আমারে তো বেজা অইছে মানষর জান বাচাইতাম।” 56 অখান কইয়া এরা আরক গাউত গেলাগি।
57 তারা যেবলা পথেদি যাইরা, অউ সময় এক বেটা আইয়া ইছারে কইলো, “ছাব, আপনে যেখানো যাইবা, আমিও আপনার লগে হনো যাইমু।” 58 ইছায় তারে কইলা, “বাবারে, হিয়ালর গাত আছে, পাখিন্তর বাদা আছে, অইলে আমি বিন-আদমর মাথা গুজার কুনু ঠাই নাই।” 59 বাদে ইছায় আরক জনরে দেখলা, দেখিয়া তারে কইলা, “ওবা, আমার লগে চলো।” হে জুয়াপ দিলো, “হুজুর, আমার বাফর মউতর বাদে তানরে মাটি দিয়া হারলে আমি আইমু।” 60 ইছায় তারে কইলা, “মরা অকলে তারার মরারে মাটি দেউক, তুমি আইয়া আল্লার বাদশাইর দাওত দেও।” 61 আরো একজনে কইলো, “হুজুর, আমি আপনার লগে যাইমু, তে আমার বাড়িত গিয়া বিদায় লইয়া আই।” 62 ইছায় তারে কইলা, “লাংগলর খুটিত ধরিয়া যেগুয়ে খরেদি ফিরিয়া চায়, হে আল্লার বাদশাইর লাখ নায়।”