13
সংক্রামক চর্মরোগ বিষয়ক নিয়মকানুন
1 সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,
2 “যদি কারোর চামড়ায় ফোঁড়া অথবা ফুসকুড়ি কিংবা উজ্জ্বল দাগ দেখা যায়, তা সংক্রামক চর্মরোগ হতে পারে, তাহলে তাকে অবশ্যই যাজক হারোণের কাছে অথবা তার কোনো ছেলের সামনে আনতে হবে এবং সেই ছেলে যেন যাজক হয়।
3 যাজক ওই ব্যক্তির চামড়ায় ক্ষত পরীক্ষা করবে এবং যদি ক্ষতের লোম সাদা রংয়ের হয়ে থাকে ও ক্ষতটির আকার চামড়ার গভীরতার চেয়েও গভীর মনে হয়, তাহলে তা এক সংক্রামক চর্মরোগ। সেটি পরীক্ষা করে যাজক তাকে অশুচি বলবে।
4 যদি তার চামড়ার ক্ষতস্থান সাদা রংয়ের হয়, কিন্তু চামড়ার গভীরতার চেয়েও ক্ষতস্থান বেশি গভীর এবং ক্ষতস্থানের লোম সাদা রংয়ের হয়নি, তাহলে যাজক তাকে সাত দিন পৃথক জায়গায় রাখবে।
5 সপ্তম দিনে যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি তার নজরে ক্ষত অপরিবর্তিত থাকে ও চামড়ায় তা প্রসারিত না হয়, তাহলে আরও সাত দিন যাজক তাকে পৃথক জায়গায় রাখবে।
6 সপ্তম দিনে যাজক আবার তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি ক্ষত মুছে যায় ও চামড়ায় প্রসারিত না হয় তাহলে যাজক তাকে শুচি ঘোষণা করবে। মানুষটির শুধু ফুসকুড়ি হয়েছে। সে অবশ্যই তার পরিধান ধুয়ে নেবে ও শুচি হবে।
7 নিজে শুচি ঘোষিত হওয়ার জন্য যাজকের কাছে নিজেকে দেখানোর পরে যদি সেই ফুসকুড়ি তার চামড়ায় প্রসারিত হয়, তাহলে সে আবার যাজকের সামনে উপস্থিত হবে।
8 যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি তার চামড়ায় ফুসকুড়ি প্রসারিত হয়ে থাকে তাহলে যাজক তাকে অশুচি বলবে; এটি এক সংক্রামক রোগ।
9 “যখন কারোর সংক্রামক চর্মরোগ হয়, যাজকের কাছে তাকে আনতেই হবে।
10 যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি চামড়ায় সাদা রংয়ের ফোঁড়া হয় ও লোম সাদা রং হয়ে যায় এবং ফোঁড়াতে কাঁচা মাংস থাকে,
11 তাহলে এটি এক দুরারোগ্য চর্মরোগ এবং যাজক তাকে অশুচি বলবে ও তাকে আলাদা জায়গায় রাখবে না, কারণ ইতিমধ্যে সে অশুচি হয়েছে।
12 “যদি তার সারা শরীরে রোগ প্রসারিত হয় এবং যাজকের নজরে পড়ে যে সংক্রমিত মানুষটি আপাদমস্তক রোগগ্রস্ত,
13 তাহলে যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি তার সারা শরীর রোগে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে, তাহলে যাজক তাকে শুচি বলবে। যেহেতু তার সারা শরীর সাদা হয়ে গিয়েছে, তাই সে শুচি।
14 কিন্তু যখনই তার দেহে কাঁচা মাংস দেখা যায়, সে অশুচি হবে।
15 কাঁচা মাংস যাজকের নজরে পড়লে যাজক তাকে অশুচি বলবে। কাঁচা মাংস অশুচি; তার সংক্রমিত রোগ হয়েছে।
16 কাঁচা মাংস অপরিবর্তিত হয়ে যদি সাদা রং হয়ে যায়, তাহলে সে অবশ্যই যাজকের কাছে যাবে।
17 যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি ক্ষতস্থানগুলি সাদা রং হয়, তাহলে সংক্রমিত মানুষটিকে যাজক শুচি বলবে; এইভাবে সে শুচি হবে।
18 “যখন কারোর চামড়ায় একটি ফোঁড়া থাকে এবং তা সেরে যায়,
19 আর ফোঁড়ার জায়গায় সাদা রংয়ের অথবা হালকা শ্বেতির ছোপ দেখা যায়, তাহলে তাকে অবশ্যই যাজকের কাছে আনতে হবে।
20 যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি চামড়ার গভীরতার চেয়েও তা বেশি গভীর দেখায় ও সংক্রমিত স্থানের লোম সাদা হয়ে যায়, তাহলে যাজক তাকে অশুচি বলবে। এটি এক সংক্রামক চর্মরোগ, যা ফোঁড়া রূপে উৎপাদিত হয়েছে।
21 কিন্তু যাজকের পরীক্ষায় যদি দেখা যায়, তাতে সাদা রংয়ের লোম নেই এবং চামড়ার গভীরতার চেয়ে তা বেশি গভীর নয়, দাগ মুছে গিয়েছে, তাহলে যাজক সাত দিনের জন্য তাকে পৃথক রাখবে।
22 যদি চামড়ায় দাগ প্রসারিত হতে থাকে, তাহলে যাজক তাকে অশুচি বলবে; রোগটি সংক্রামক।
23 কিন্তু যদি দাগ অপরিবর্তিত থাকে এবং না বাড়ে, এটি ফোঁড়ার ক্ষতচিহ্নমাত্র ও যাজক তাকে শুচি বলবে।
24 “যখন কারো চামড়া পুড়ে যায় এবং পোড়া কাঁচা মাংসে হালকা রক্তিম সাদাটে অথবা সাদা দাগ দেখা যায়,
25 তাহলে যাজক সেই দাগ পরীক্ষা করবে এবং যদি ওই স্থানের লোম সাদা রং হয়ে যায় ও চামড়া থেকে অংশটি নিম্ন মানের মনে হয়, তাহলে এটি এক সংক্রামক রোগ, যা আগুনে পুড়ে উৎপন্ন হয়েছে। যাজক তাকে অশুচি বলবে; এটি সংক্রামক এক চর্মরোগ।
26 কিন্তু যদি যাজক দ্বারা পরীক্ষা করার পর ক্ষতস্থানে সাদা রংয়ের লোম না দেখা যায় ও চামড়ার গভীরে না থাকে, দাগ মুছে যায়, তাহলে যাজক সাত দিনের জন্য তাকে পৃথক স্থানে রাখবে।
27 সপ্তম দিনে যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি তার চর্মরোগ ছড়িয়ে যায়, তাহলে যাজক তাকে অশুচি বলবে; এটি সংক্রামক এক চর্মরোগ।
28 অন্যদিকে, যদি দাগ অপরিবর্তিত থাকে এবং চামড়ায় ছড়িয়ে না যায়, কিন্তু দাগ দেখা না যায়, তাহলে তা আগুনে পোড়া এক ফোলা অংশ এবং যাজক তাকে শুচি বলবে; এটি কেবল আগুনে পোড়া এক ক্ষতচিহ্ন।
29 “যদি কোনো নর বা নারীর মাথায় কিংবা থুতনিতে ক্ষত থাকে,
30 তাহলে যাজক সেই ক্ষত পরীক্ষা করবে এবং যদি সেই ক্ষত চামড়ার চেয়েও গভীরে থাকে এবং ক্ষতস্থানের লোম হলুদ ও রুগ্ন হয়, তাহলে ওই মানুষকে যাজক অশুচি ঘোষণা করবে; এটি মস্তকের অথবা থুতনির এক সংক্রামক রোগ।
31 কিন্তু যদি যাজক দ্বারা এই ধরনের ক্ষত পরীক্ষা করার পর তা চামড়ার চেয়েও গভীরে না থাকে এবং সেখানে কালো রংয়ের লোম দেখা না যায়, তাহলে রোগগ্রস্ত মানুষটিকে যাজক সাত দিনের জন্য পৃথক জায়গায় রাখবে।
32 সপ্তম দিনে যাজক তার ক্ষতস্থান পরীক্ষা করবে এবং যদি সেটি প্রসারিত না হয় ও সেখানে হলুদ রংয়ের লোম না থাকে এবং চামড়ার চেয়েও গভীরে এর অবস্থান না থাকে,
33 তাহলে রোগগ্রস্ত নর বা নারীর ক্ষতস্থান ছাড়া সর্বত্র লোম চেঁচে ফেলবে এবং যাজক সাত দিনের জন্য তাকে পৃথক জায়গায় রাখবে।
34 সপ্তম দিনে যাজক তার ক্ষত পরীক্ষা করবে এবং যদি চামড়ায় ক্ষতের প্রসারণ না দেখা যায় ও চামড়ার চেয়েও গভীরে এর অবস্থান না হয়, তাহলে যাজক তাকে শুচি ঘোষণা করবে। সে তার পরিধান অবশ্যই ধুয়ে পরিষ্কার করবে ও নিজে শুদ্ধ হবে।
35 কিন্তু যদি যাজক দ্বারা তাকে শুচি ঘোষণা করার পর তার চামড়ায় ক্ষত প্রসারিত হয়,
36 তাহলে যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি চামড়ায় প্রসারিত ক্ষত দেখা যায়, তাহলে যাজকের হলুদ রংয়ের লোম দেখার প্রয়োজন নেই; মানুষটি অশুচি।
37 অন্যদিকে, তার বিচারে যদি দাগ অপরিবর্তিত থাকে এবং সেখানে কালো রংয়ের লোম উৎপন্ন হয়, তাহলে ক্ষত নিরাময় হয়েছে। সে শুচিশুদ্ধ এবং যাজক তাকে শুদ্ধ ঘোষণা করবে।
38 “যখন কোনো নর বা নারীর চামড়ায় সাদা রং দাগ দেখা যায়,
39 তাহলে যাজক সমস্ত দাগ পরীক্ষা করবে এবং যদি দাগগুলি হালকা সাদা রং থাকে, তাহলে তা ক্ষতিহীন ফুসকুড়ি, যা চামড়ায় ফুটে উঠেছে; সেই ব্যক্তি শুদ্ধ।
40 “যদি কোনো মানুষের মাথায় চুল না থাকে ও তার টাক পড়ে, সে শুচি।
41 যদি তার মাথার সামনের দিকে চুল না থাকে এবং টাকপড়া কপাল দেখা যায়, তাহলে সে শুচি।
42 কিন্তু যদি তার টাক মাথায় বা কপালে হালকা রক্তিম সাদাটে ক্ষত থাকে, তাহলে তা মাথায় বা কপালে অঙ্কুরিত এক সংক্রামক রোগ।
43 যাজক তাকে পরীক্ষা করবে এবং যদি তার মাথায় অথবা কপালে ফুলে ওঠা ক্ষত এবং সংক্রামক চামড়ার রোগের মতো হালকা রক্তিম সাদাটে হয়,
44 তাহলে মানুষটি রোগগ্রস্ত ও অশুচি। তার মাথায় ক্ষতের কারণে যাজক তাকে অশুচি ঘোষণা করবে।
45 “এমন এক সংক্রামক রোগগ্রস্ত মানুষ অবশ্যই ছেঁড়া কাপড় পরবে, তার চুল এলোমেলো থাকুক; সে তার মুখমণ্ডলের নিচের দিকটি ভাগ ঢেকে রাখবে ও তারস্বরে বলবে ‘অশুচি! অশুচি!’
46 যতদিন তার ক্ষত থাকবে, তাকে অশুচি বলা হবে। সে অবশ্যই একলা থাকবে; সে অবশ্যই শিবিরের বাইরে দিন কাটাবে।
ছাতারোগ সম্বন্ধে নিয়মাবলি
47 “ছাতারোগ দ্বারা যদি কোনো কাপড় কলঙ্কিত হয়, হতে পারে তা পশমি বা মসিনা কাপড়,
48 তাঁতের কাপড়, অথবা মসিনা কিংবা পশমে বোনা, যে কোনো চামড়ার উপাদান অথবা চামড়ার জিনিস,
49 যদি কাপড়ে অথবা চামড়ায়, কিংবা তাঁত কাপড়ে বা বোনা উপাদানে অথবা চামড়ার জিনিসে কলঙ্ক থাকে, সবুজ অথবা হালকা রক্তিম রং পাওয়া যায়, তাহলে প্রসারিত ছাতারোগ এবং অবশ্যই তা যাজককে দেখাতে হবে।
50 যাজক ওই ছাতারোগ পরীক্ষা করবে ও সাত দিনের জন্য রোগগ্রস্ত উপাদান বিচ্ছিন্ন রাখবে।
51 সপ্তম দিনে সে সেটি পরীক্ষা করবে এবং যদি ছাতারোগ কাপড়ে, অথবা কোনো বোনায়, কিংবা বোনা পরিধানে, অথবা চামড়ায়, কিংবা ব্যবহার করা যে কোনো জিনিসে প্রসারিত হয়ে থাকে, তাহলে তা এক মারাত্মক ছাতারোগ, অশুচি জিনিস।
52 সে ওই কাপড়, অথবা তাঁতের কাপড়, কিংবা পশম বা মসিনার কাপড় অথবা কলঙ্কিত যে কোনো চর্মজাত জিনিস পোড়াবে, কেননা ছাতারোগ ধ্বংসাত্মক। ওই জিনিস অবশ্যই পুড়িয়ে দিতে হবে।
53 “কিন্তু যাজক দ্বারা পরীক্ষার পর যদি দেখা যায় ছাতারোগ কাপড়ে কিংবা কোনো বয়ন শিল্পে বা বোনা উপাদানে অথবা চর্মজাত দ্রব্যে প্রসারিত না হয়,
54 তাহলে সেই কলঙ্কিত জিনিস ধুয়ে নিতে তাকে আদেশ দেওয়া হবে। পরে আরও সাত দিনের জন্য সে ওই জিনিস দূরে রাখবে।
55 প্রভাবিত জিনিস ধোয়ার পরে যাজক সেটি পরীক্ষা করবে এবং যদি ছাতারোগের ছোপ পরিবর্তিত না হয় ও তার প্রসারণ নজরে না পড়ে, তবুও এটি অশুদ্ধ। একদিকে বা অন্যদিকে প্রভাবিত ছাতা আগুনে পোড়াতে হবে।
56 যদি যাজক দ্বারা পরীক্ষিত হয়ে জিনিসটি ধোয়ার পরে ছাতারোগ না দেখা যায়, তাহলে কলঙ্কিত কাপড়ের টুকরো অথবা চামড়া কিংবা বয়ন শিল্প বা বোনা উপাদান সে ছিঁড়ে ফেলবে।
57 কিন্তু যদি তা কাপড়ে অথবা বয়ন শিল্পে কিংবা বোনা উপাদানে বা চামড়ার জিনিসে আবার দেখা যায়, তাহলে তা ছড়িয়ে যাচ্ছে এবং অল্পবিস্তর ছাতারোগ অবশ্যই আগুনে পোড়াতে হবে।
58 কাপড় অথবা বয়ন শিল্প কিংবা বোনা উপাদান অথবা চামড়ার জিনিস যা ধোয়া হয়েছে ও সেটি ছাতারোগ মুক্ত দেখা যায়, তাহলে ওই জিনিস অবশ্যই পুনরায় ধুয়ে নিতে হবে, তাহলে সেটি শুদ্ধ হবে।”
59 পশমি বা মসিনার কাপড়, বয়ন শিল্প কিংবা বোনা উপাদান অথবা চর্মজাত যে কোনো জিনিসের মলিনতা সম্বন্ধে নিয়মাবলি রয়েছে যেগুলি শুদ্ধ অথবা অশুদ্ধ বলা যেতে পারে।