9
সদাপ্রভু শলোমনের কাছে আবির্ভূত হন
1 শলোমন যখন সদাপ্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করার কাজ সমাপ্ত করলেন, এবং তাঁর যা যা করার বাসনা ছিল, সেসব অর্জন করে ফেলেছিলেন,
2 সদাপ্রভু তখন দ্বিতীয়বার তাঁর কাছে আবির্ভূত হলেন, যেভাবে একবার তিনি গিবিয়োনে তাঁর কাছে আবির্ভূত হলেন।
3 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন:
“তুমি আমার কাছে যে প্রার্থনা ও মিনতি জানিয়েছ, আমি তা শুনেছি; আমার নাম চিরকালের জন্য তোমার নির্মাণ করা মন্দিরে স্থাপন করে আমি সেটি পবিত্র করে দিয়েছি। আমার চোখের দৃষ্টি ও আমার অন্তর সবসময় সেখানে থাকবে।
4 “আর তোমায় বলছি, তোমার বাবা দাউদের মতো তুমিও যদি আমার সামনে অন্তরের সততা ও ন্যায়পরায়ণতা সমেত বিশ্বস্ততাপূর্বক চলো, এবং আমি যা যা আদেশ দিয়েছি, সেসব করো ও আমার বিধিবিধান ও নিয়মকানুনগুলি পালন করো,
5 তবে চিরকালের জন্য আমি ইস্রায়েলের উপর তোমার রাজসিংহাসন স্থায়ী করব, ঠিক যেমনটি আমি তোমার বাবা দাউদের কাছে এই কথা বলে প্রতিজ্ঞা করলাম, ‘ইস্রায়েলের সিংহাসনে তোমার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য কোনও লোকের অভাব হবে না।’
6 “কিন্তু যদি তুমি বা তোমার বংশধররা আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাও ও আমি তোমাকে যে যে আদেশ ও বিধিবিধান দিয়েছি, সেগুলি পালন না করো ও অন্যান্য দেবদেবীর সেবা ও আরাধনা করতে থাকো,
7 তবে আমি ইস্রায়েলকে যে দেশ দিয়েছি, সেই দেশ থেকে তাদের উৎখাত করব ও এই যে মন্দিরটি আমি আমার নামের উদ্দেশে পবিত্র করেছি, সেটিও অগ্রাহ্য করব। ইস্রায়েল তখন সব লোকজনের কাছে অবজ্ঞার ও উপহাসের এক পাত্রে পরিণত হবে।
8 এই মন্দিরটি ভাঙা ইটপাথরের এক স্তূপে পরিণত হবে। যারা যারা তখন এখান দিয়ে যাবে, তারা সবাই মর্মাহত হবে, টিটকিরি করবে ও বলবে, ‘সদাপ্রভু কেন এই দেশের ও এই মন্দিরটির প্রতি এমনটি করলেন?’
9 লোকেরা উত্তর দেবে, ‘যেহেতু তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করল, যিনি মিশর থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের বের করে এনেছিলেন, এবং যেহেতু তারা অন্যান্য দেবতাদের সাগ্রহে গ্রহণ করল, ও তাদের আরাধনা ও সেবা করল—তাইতো তিনি তাদের উপর এইসব দুর্বিপাক নিয়ে এসেছেন।’ ”
শলোমনের অন্যান্য কাজকর্ম
10 যে কুড়ি বছর ধরে শলোমন এই দুটি ভবন—সদাপ্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ—নির্মাণ করলেন, তা পার হয়ে যাওয়ার পর
11 রাজা শলোমন গালীল প্রদেশের কুড়িটি নগর সোরের রাজা হীরমকে দিলেন, কারণ হীরম তাঁর চাহিদানুসারে যাবতীয় দেবদারু ও চিরহরিৎ কাঠ এবং সোনাদানা সরবরাহ করলেন।
12 কিন্তু যে নগরগুলি শলোমন হীরমকে দিলেন, তিনি যখন সেগুলি দেখতে গেলেন, তখন সেগুলি তাঁর খুব একটি পছন্দ হয়নি।
13 “ভাইটি, আপনি আমাকে এসব কী নগর দিয়েছেন?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। আর তিনি সেগুলির নাম দিলেন কাবুল দেশ, আর এই নামটিই আজও পর্যন্ত রয়ে গিয়েছে।
14 ইত্যবসরে হীরম রাজামশাইকে একশো কুড়ি তালন্ত সোনা পাঠালেন।
15 রাজা শলোমন যেসব বেগার শ্রমিককে বাধ্যতামূলকভাবে সদাপ্রভুর মন্দির, তাঁর নিজের প্রাসাদ, উঁচু চাতাল, জেরুশালেমের প্রাচীর, এবং হাৎসোর, মগিদ্দো ও গেষর গাঁথার কাজে লাগলেন, এই হল তাদের বিবরণ।
16 (মিশরের রাজা ফরৌণ গেষর আক্রমণ করে তা অধিকার করে নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আগুন ধরিয়ে দিলেন। তিনি সেখানকার কনানীয় অধিবাসীদের হত্যা করে সেটি তাঁর মেয়ে, শলোমনের স্ত্রীকে বিয়ের যৌতুকরূপে উপহার দিলেন।
17 আর শলোমন গেষর নগরটি পুনর্নির্মাণ করলেন) তিনি নিচের দিকের বেথ-হোরোণ,
18 বালৎ, ও তাঁর দেশের অন্তর্গত মরুভূমিতে অবস্থিত তামর,
19 তথা তাঁর সব গুদাম-নগর এবং তাঁর রথ ও ঘোড়া রাখার জন্য কয়েকটি নগর—জেরুশালেমে, লেবাননে ও তাঁর শাসিত গোটা এলাকা জুড়ে সর্বত্র যা যা তিনি তৈরি করতে চেয়েছিলেন, সেসব তিনি তৈরি করলেন।
20 ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের মধ্যেও কিছু লোক সেখানে অবশিষ্ট রয়ে গেল। (এইসব লোক ইস্রায়েলী নয়)
21 শলোমন দেশে থেকে যাওয়া এইসব লোকের বংশধরদের—যাদের ইস্রায়েলীরা উচ্ছেদ করতে পারেনি—বাধ্যতামূলকভাবে বেগার শ্রমিক রূপে কাজে লাগালেন, আজও পর্যন্ত যা তারা করে চলেছে।
22 কিন্তু শলোমন ইস্রায়েলীদের কাউকে ক্রীতদাস করেননি; তারা তাঁর যোদ্ধা, কর্মকর্তা, সেনাপতি, এবং তাঁর রথের সারথি ও অশ্বারোহীদের সেনাপতি হল।
23 এছাড়াও তারা শলোমনের বিভিন্ন প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তা হল 550 জন কর্মকর্তা এই কাজে লিপ্ত লোকজনের কাজ দেখাশোনা করত।
24 শলোমন ফরৌণের মেয়ের জন্য যে প্রাসাদটি নির্মাণ করলেন, তিনি দাউদ-নগর থেকে সেখানে চলে আসার পর শলোমন সেখানে কয়েকটি উঁচু চাতালও নির্মাণ করে দিলেন।
25 শলোমন সদাপ্রভুর উদ্দেশে যে যজ্ঞবেদিটি তৈরি করলেন, সেখানে তিনি বছরে তিনবার হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করতেন, এবং সেগুলির সাথে সাথে সদাপ্রভুর সামনে ধূপও জ্বালাতেন, আর এভাবেই তিনি মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করলেন।
26 এছাড়াও রাজা শলোমন লোহিত সাগরের তীরে, ইদোমের এলতের কাছে অবস্থিত ইৎসিয়োন-গেবরে কয়েকটি জাহাজ তৈরি করলেন।
27 হীরম শলোমনের লোকজনের সঙ্গে থেকে নৌবাহিনীতে সেবাকাজ করার জন্য তাঁর সেইসব নাবিককে পাঠিয়ে দিলেন, যারা সমুদ্রের ব্যাপারে অভিজ্ঞ ছিল।
28 তারা জাহাজে চড়ে ওফীরে গেল ও সেখান থেকে 420 তালন্ত সোনা এনে রাজা শলোমনের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল।