41
“তুমি কি বড়শি দিয়ে লিবিয়াথনকে* টেনে তুলতে পারো
বা দড়ি দিয়ে তার জিভ বাঁধতে পারো?
তুমি তার নাকে কি দড়ি পরাতে পারো
বা বড়শি দিয়ে তার চোয়াল বিঁধতে পারো?
সে কি তোমার কাছে অনবরত দয়া ভিক্ষা করবে?
সে কি কোমল স্বরে তোমার সঙ্গে কথা বলবে?
জীবনভোর তোমার দাসত্ব করার জন্য
সে কি তোমার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে?
তুমি কি পাখির মতো তাকে পোষ মানাবে
বা তোমার বাড়ির যুবতীদের জন্য তাকে শিকলে বেঁধে রাখবে?
ব্যবসায়ীরা কি তাকে নিয়ে ব্যবসা করবে?
তারা কি সওদাগরদের মধ্যে তাকে ভাগ করে দেবে?
তুমি কি হারপুন দিয়ে তার চামড়া
বা মাছ ধরার বর্শা দিয়ে তার মাথা বিঁধতে পারো?
তুমি যদি তার গায়ে হাত দাও,
তবে সেই সংগ্রাম তোমার মনে থাকবে ও তুমি আর কখনও তা করবে না!
তাকে বশে আনার যে কোনো আশা মিথ্যা;
তাকে দেখামাত্রই মানুষ কাহিল হয়ে যায়।
10 কেউ সাহস করে তাকে জাগাতে যায় না।
তবে আমার সামনে কে দাঁড়াতে পারবে?
11 কে দাবি করে বলতে পারে যে আমাকেই দিতে হবে?
আকাশের নিচে যা যা আছে, সবই তো আমার।
 
12 “লিবিয়াথনের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিষয়ে, তার শক্তি
ও তার শ্রীমণ্ডিত গঠনের বিষয়ে আমি কথা না বলে থাকতে পারব না।
13 কে তার বাইরের আচ্ছাদন খুলে নিতে পারে?
কে তার বর্মের জোড়া আচ্ছাদন ভেদ করতে পারে?
14 কে তার সেই মুখের দরজা খোলার সাহস করতে পারে,
যা ভয়ংকর দাঁতের সারি দিয়ে সাজানো?
15 তার পিঠে সারি সারি ঢাল আছে§
যা একসাথে আঁটোসাঁটোভাবে বাঁধা থাকে;
16 প্রত্যেকটি ঢাল পরবর্তীটির সাথে এমন ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত
যে মাঝখান দিয়ে একটুও বাতাস বইতে পারে না।
17 সেগুলি পরস্পরের সঙ্গে অটলভাবে জুড়ে আছে;
সেগুলি একসাথে আটকে আছে ও সেগুলি আলাদা করা যায় না।
18 সে হ্রেষাধ্বনি করলে আলোর ঝলক বের হয়;
তার চোখদুটি ভোরের আলোকরশ্মির মতো।
19 তার মুখ থেকে আগুনের শিখা প্রবাহিত হয়;
সবেগে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নিক্ষিপ্ত হয়।
20 তার নাক থেকে ধোঁয়া বের হয়
যেভাবে ফুটন্ত পাত্র থেকে তা জ্বলন্ত নলখাগড়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
21 তার নিঃশ্বাসে কয়লা জ্বলে ওঠে,
ও তার মুখ থেকে আগুনের শিখা উড়ে আসে।
22 তার ঘাড়ে শক্তির বাস;
আতঙ্ক তার সামনে সামনে যায়।
23 তার শরীরের ভাঁজ আঁটোসাঁটোভাবে যুক্ত;
সেগুলি মজবুত ও অনড়।
24 তার বুক পাষাণ-পাথরের মতো কঠিন,
জাঁতার নিচের পাটের মতো নিরেট।
25 যখন সে জেগে ওঠে, তখন শক্তিমানেরাও ভয় পায়;
তারা আতঙ্কিত হয়ে তার সামনে থেকে পশ্চাদপসরণ করে।
26 তার দিকে এগিয়ে আসা তরোয়াল কোনও প্রভাব বিস্তার করতে পারে না,
বর্শা বা বাণ বা বল্লমও করতে পারে না।
27 সে লোহাকে খড়ের মতো
ও ব্রোঞ্জকে পচা কাঠের মতো মনে করে।
28 তির ছুঁড়ে তাকে তাড়ানো যায় না;
গুল্‌তির নুড়ি-পাথর তার কাছে তুষের সমান।
29 গদা তার কাছে নিছক এক টুকরো খড়মাত্র;
বর্শার ঝন্‌ঝনানিকে সে উপহাস করে।
30 তার বগলগুলি খাঁজকাটা খাপরাবিশেষ,
শস্য ঝাড়ার হাতুড়ির মতো সে কাদায় লম্বা সারি টেনে দেয়।
31 অগাধ জলকে সে ফুটন্ত কড়ায় রাখা জলের মতো মন্থন করে
ও এক পাত্রে রাখা মলমের মতো করে সমুদ্রকে নাড়ায়।
32 সে তার পিছনে এক ঝকঝকে ছাপ ছেড়ে যায়;
যে কেউ দেখে ভাববে যে অগাধ সমুদ্রের বুঝি পাকা চুল আছে।
33 পৃথিবীর কোনো কিছুই তার সমতুল্য নয়—
সে এক নির্ভীক প্রাণী।
34 সব উদ্ধত প্রাণীকে সে অবজ্ঞার চোখে দেখে;
সব অহংকারী প্রাণীর উপরে সে রাজত্ব করে।”
* 41:1 লিবিয়াথনের আসল পরিচয় এক বিতর্কিত বিষয়; প্রাচীন সাহিত্যে এটিকে পৌরাণিক এক সমুদ্র-দানবরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে 41:7 তিমি বা বড়ো বড়ো সামুদ্রিক মাছ শিকারের অস্ত্রবিশেষ 41:13 হিব্রু ভাষায়, জোড়া লাগাম § 41:15 অথবা, তার অহংকার যেন তার ঢালের সারি